FacebookTwitterYouTubeDailymotionScribdCalameo
SlideshareIssuuPinterestWhatsAppInstagramTelegram
Chat About Islam Now
Choose your country & click on the link of your language.
Find nearby Islamic centers & GPS location on the map.

Our Islamic Library contains:
Islamic TVs channels LIVE
Islamic Radios LIVE
Multimedia ( Videos )
Multimedia ( Audios )
Listen to Quran
Articles
Morality in Islam
Islam Q & A
Misconceptions
Interactive files & QR codes
The Noble Qur'an
Understanding Islam
Comparative Religions
Islamic topics
Women in Islam
Prophet Muhammad (PBUH)
Qur'an and Modern Science
Children
Answering Atheism
Islamic CDs
Islamic DVDs
Presentations and flashes
Friend sites

Articles' sections



Author:


Go on with your language:
qrcode

হিন্দু জিজ্ঞেস করল: কোনটি ভাল, হিন্দুধর্ম বা ইসলামের এবং কেন?
শায়খঃ মুহাম্মদ সালিহ আল-মুনাজ্জিদ

Viewed:
2641

হিন্দু আশ্চর্যের: কোনটি ভাল, হিন্দুধর্ম বা ইসলামের এবং কেন?     

ইসলাম কিউ এ

অনুবাদক: আব্দুল্লাহ আল মামুন আল-আযহারী

        সম্পাদক: ড. আবু বকর মুহাম্মাদ যাকারিয়া

কোনটি সর্বোত্তম দীন

ফতওয়া নং ২০৯১৩৯: একজন হিন্দু জিজ্ঞেস করেছেন, কোন ধর্মটি সর্বোত্তম, হিন্দুধর্ম ধর্ম নাকি ইসলাম এবং কেন?

প্রশ্ন: আমি ভারত মহাসাগরের তীরবর্তী মরিশাসের অধিবাসী। অনুগ্রহ করে আমাকে জানাবেন, কোন দীনটি (ধর্ম) উত্তম এবং কেন? হিন্দুধর্ম নাকি ইসলাম? উল্লেখ্য যে, আমি একজন হিন্দু ধর্মাবলম্বী।

জবাব: আলহামদুলিল্লাহ (সব প্রশংসা মহান আল্লাহর)। সর্বোত্তম দীন হলো সেটি যে দীন প্রমাণ করতে সক্ষম যে, এটিই একমাত্র দীন যে দীনের উপর মহিমান্বিত মহান সৃষ্টিকর্তা সন্তুষ্ট; তিনি যে দীনকে মানব জাতির জন্য নূর তথা হিদায়েত হিসেবে নাযিল করেছেন, যা তাদের দুনিয়ার জীবন সুখ-শান্তি ও সৌভাগ্যময় করে তোলে এবং ও পরবর্তী জীবনে তাদেরকে নাজাত দিতে সক্ষম হয়। আর যে দীনটি সত্য ও সঠিক হওয়ার দলিল-প্রমাণ স্পষ্ট ও নির্ভেজাল। এ ব্যাপারে মানুষের অন্তরে কোনো দ্বিধা-সংশয় থাকতে পারবে না, আবার এ দীনের আনিত বিষয়গুলোর অনুরূপ কোনো কিছু কেউ আনতেও সক্ষম হবে না।

মিথ্যাবাদী দাজ্জালেরা যে ভ্রান্ত-দুর্বল দলিল প্রমাণ আনবে সে ব্যাপারে আল্লাহ তা‘আলা আগেই অবগত আছেন, তাই তিনি তাঁর নবী-রাসূলগণের সত্যতা প্রমাণ ও তাদের সাহায্যার্থে তাদেরকে সর্বদিক ব্যাপ্তি মু‘জিযা ও স্পষ্ট নিদর্শন দিয়ে সাহায্য করেছেন, যা মানুষকে অহীপ্রাপ্ত নবীর উপর ঈমান আনয়ন করতে সাহায্য করে। ফলে তারা নবীর ওপর ঈমান এনেছে এবং তার অনুসরণ করেছে।

এমনিভাবে ইসলামের নবী মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম স্পষ্ট মু‘জিযা নিয়ে এসেছেন। তাঁর আনিত মু‘জিযা অগণিত। এ ব্যাপারে অনেক লেখক বড় বড় কিতাব রচনা করেছেন। তবে মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের আনিত সর্বশ্রেষ্ঠ মু‘জিযা বা অপারগকারী বিষয় হলো, মহাগ্রন্থ আল-কুরআন, যা আরবের সকল কবি সাহিত্যিককে চ্যালেঞ্জ করেছিল এর অনুরূপ সর্বদিক থেকে পরিপূর্ণ কোনো আয়াত আনতে; (কিন্তু তারা তা আনতে সক্ষম হয় নি।) (আর এ কুরআন বিভিন্ন দিক থেকে মু‘জিয বা অপারগকারী। যেমন,

  • যেহেতু আল-কুরআনে রয়েছে ভাষাগত অলঙ্কার বিষয়ক বিস্ময়। কুরাইশদের শ্রেষ্ঠ বিশুদ্ধ কবি সাহিত্যিকগণ - ইতিহাসের সাক্ষ্যানুযায়ী বিশুদ্ধতার চরম শিখরে আরোহন সত্ত্বেও- কুরআনের অনুরূপ কোনো আয়াত আনতে সক্ষম হয় নি (বরং তারা অকপটে স্বীকার করেছে যে, এটি কোনো মানুষের কথা নয়)।

  • তাছাড়া আল-কুরআনে রয়েছে বৈজ্ঞানিক বিস্ময়কর বিষয়াদি, এছাড়াও রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সুন্নাতেও অনেক বৈজ্ঞানিক বিস্ময় রয়েছে। সে যুগে বিজ্ঞানের উৎকর্ষতা না থাকা সত্ত্বেও এ ধরণের বৈজ্ঞানিক বিস্ময়সমূহ একমাত্র অহী ছাড়া আনয়ন করা সম্ভব ছিল না। বর্তমানেও বিজ্ঞানের চরম উৎকর্ষতা সত্ত্বেও কুরআনে আনিত কোনো বৈজ্ঞানিক বিষয় ভুল প্রমাণ করতে সক্ষম হয় নি।

  • তদ্রূপ আল-কুরআনে রয়েছে গায়েব তথা অনুপস্থিত বিষয়সমূহের বিস্ময়কর সংবাদ; যেহেতু আল-কুরআন পূর্ববর্তী ও পরবর্তী জাতিসমূহ সম্পর্কে নানা সংবাদ দিয়েছে; অথচ ইতিহাস সম্পর্কে মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কোনো জ্ঞান-ই ছিল না; এমনকি আহলে কিতাবীদের অবশিষ্ট কিছু লোক ছাড়া সে যুগে আরবে ইতিহাস জানা কোনো লোক ছিল না।

  • অনুরূপ আল-কুরআনে রয়েছে শরী‘আত তথা বিধিবিধানগত পরিপূর্ণতার বিস্ময়। মানব জীবনের প্রতিটি দিকই তাতে রয়েছে। যেমন, আখলাক, ব্যক্তিগত আদব-কায়দা, পারিবারিক আইন-কানুন, নাগরিক আইন, আন্তর্জাতিক আইন, সামাজিক আইন, মানব জাতির মাঝে ন্যায় বিচার ও সমতার মৌলিক বিধান, দুনিয়া, গায়েব ও আখিরাতের অর্থ, সৌভাগ্য ও দুর্দশার অর্থসহ মানব জীবনের সর্ববিষয়ের পরিপূর্ণ সমাধান। অথচ এসব কিছু একজন উম্মী তথা লেখা পড়া না জানা মানুষের থেকে প্রকাশিত হয়েছে!! তার বন্ধুদের পূর্বে তার শত্রুরাও এর সত্যতা ও আমানতদারিতার কথা অকপটে স্বীকার করেছে।

  • এ কুরআন চৌদ্দশত বছর ধরে এক বিশাল ইসলামী সভ্যতা-সংস্কৃতি গঠন করে এ পর্যন্ত নিয়ে এসেছে।

সুতরাং আমাদের দৃষ্টিতে সর্বশ্রেষ্ঠ দীন হলো তা-ই যা আপনাকে একটি মাত্র শক্তির সাথে সম্পৃক্ত করে দিবে, আর সে শক্তি হলো যিনি আপনাকে সৃষ্টি করেছেন, যিনি আপনাকে অফুরন্ত নি‘আমতরাজি দান করেছেন, যিনি আসমান ও জমিনের একচ্ছত্র মালিক, সেটি এমন শক্তি যা আপনাকে রহমত দান করবে, আপনি যখন তাঁর উপর ঈমান আনবেন এবং তাঁর নির্দেশিত সৎকাজ করবেন তিনি পরকালে আপনার সাথে থাকবেন, আর তিনি হলেন একমাত্র আল্লাহ, তিনি সুমহান, তিনি এক ও অদ্বিতীয়, অমুখাপেক্ষী- তিনি ব্যতীত সবই তাঁর মুখাপেক্ষী। তিনি তাকে ছাড়া অন্য কারো সাথে আপনাকে সংযুক্ত করবেন না। তিনি ব্যতীত সব কিছুই তাঁর সৃষ্টিজীব, দুর্বল ও তাঁর মুখাপেক্ষী। আর এভাবে মানুষকে অন্যের ইবাদতের বন্ধন মুক্ত করে একমাত্র আল্লাহর ইবাদতমুখী করে, জমিনের সব ধরণের সম্পর্ক ছিন্ন করে আল্লাহর সাথে সম্পর্কযুক্ত করে। জমিনের এসব সম্পর্কের কারণেই মানব জাতির অপমান, লাঞ্ছনা, যুলুম, নির্যাতন, একে অপরের উপর প্রভাব প্রতিপত্তি ইত্যাদি করে থাকে, আর এসব কিছু করে থাকে বাতিল ধর্মের নামে; যা মানুষকে বিভিন্ন শ্রেণি ও স্তরে বিভক্ত করে রেখেছে। এ ব্যাপারে ড. মুহাম্মাদ দিয়াউর রহমান আল-আ‘যামী লিখিত ‘দিরাসাত... গ্রন্থের ‘তাবাকাত ফিল মুজতামা‘ল হিন্দুসী’ (হিন্দু সমাজে মানুষের বিবিধ স্তর) পৃ. ৫৬৫ পৃষ্ঠায় বিস্তারিত দেখুন। এসব বাতিল ধর্ম আল্লাহ ব্যতীত অন্যের ইবাদত সাব্যস্ত করে; এমনকি পশুরও, যেমন গরু ইত্যাদির ইবাদত করতে বলে। ফলে যে মানুষকে আল্লাহ বিবেক, তাঁর পক্ষ থেকে রূহ প্রদান করে জীবন দান করে সম্মানিত করেছেন, সে সেসব চতুষ্পদ প্রাণিকে সম্মান করে, তার সামনে নতি স্বীকার করে, তার পূঁজা করে; যা তাকে না পারে কোনো উপকার করতে, না পারে কোনো ক্ষতি করতে; বরং অন্যের উপকার বা ক্ষতি করা তো দূরের কথা সে তো নিজেই নিজের মালিক নয়, নিজের কোনো উপকার বা ক্ষতি করার ক্ষমতাও রাখে না।

সর্বোত্তম দীন তো হলো সেটি যাতে রয়েছে মানব জাতির দুনিয়া ও আখিরাত উভয় জগতের সুখ-সৌভাগ্যের পূর্ণাঙ্গ পথ নির্দেশনা; কেননা দীনের মূল উদ্দেশ্য হলো সুখ-শান্তি বাস্তবায়ন করা। আর আল্লাহর পক্ষ থেকে হিদায়েত ছাড়া এ সুখ-সৌভাগ্য অর্জন সম্ভব নয়। এ সুখ-শান্তি বাস্তবায়নের জন্যই ইসলামের অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক, সামাজিক, পারিবারিক ও ব্যক্তিগত যাবতীয় পথ নির্দেশনা। মুসলিমরা প্রথম যুগে এসব হিদায়েত আঁকড়ে ধরেছিল, ফলে তারা পৃথিবীতে সব ধরণের কল্যাণ, ন্যায় ও ইনসাফপূর্ণ জীবন যাপন করেছিল। আর তারা যখন ইসলামের এসব দিক নির্দেশনা থেকে দূরে সরে গেলো ফলে আল্লাহ তাদেরকে যেসব নি‘আমত দান করেছিলেন তা তাদের থেকে ছিনিয়ে নিয়ে গেছেন।

সর্বশ্রেষ্ঠ দীন হলো যেটি কালানুক্রমে সর্বশেষে এসে পৌঁছেছে। এ দীন পূর্ববর্তী সব সত্য কিতাবের সত্যায়ন করে। তবে স্থান ও কাল ভেদে আল্লাহ যেসব শরী‘আত প্রেরণ করেছিলেন সেগুলোকে রহিত করে এবং সেসব শরী‘আতের আনিত সুসংবাদগুলোকে যথার্থতার ওপর তাগিদ দেয়। কারণ সেসব কিতাব আখেরি যমানায় একজন নবীর আগমনের সংবাদ দেয় এবং সে নবীর গুণাবলী ও বর্ণনা তাতে রয়েছে। কুরআন আমাদেরকে বলেছে যে, আগেকার সব নবী রাসূলগণ শেষ যমানার নবীর আগমনের সুসংবাদ জানতেন, তাঁর নাম হবে মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এবং আল্লাহ তাঁকে দিয়ে নবুওয়াতের দরজা বন্ধ করবেন। আল্লাহ তা‘আলা বলেছেন,

وَإِذۡ أَخَذَ ٱللَّهُ مِيثَٰقَ ٱلنَّبِيِّ‍ۧنَ لَمَآ ءَاتَيۡتُكُم مِّن كِتَٰبٖ وَحِكۡمَةٖ ثُمَّ جَآءَكُمۡ رَسُولٞ مُّصَدِّقٞ لِّمَا مَعَكُمۡ لَتُؤۡمِنُنَّ بِهِۦ وَلَتَنصُرُنَّهُۥۚ قَالَ ءَأَقۡرَرۡتُمۡ وَأَخَذۡتُمۡ عَلَىٰ ذَٰلِكُمۡ إِصۡرِيۖ قَالُوٓاْ أَقۡرَرۡنَاۚ قَالَ فَٱشۡهَدُواْ وَأَنَا۠ مَعَكُم مِّنَ ٱلشَّٰهِدِينَ 

[ال عمران: ٨١]   

“আর স্মরণ করুন, যখন আল্লাহ নবীদের অঙ্গীকার নিয়েছেন- আমি তোমাদেরকে যে কিতাব ও হিকমাত দিয়েছি, অতঃপর তোমাদের সাথে যা আছে তা সত্যায়নকারীরূপে একজন রাসূল তোমাদের কাছে আসবে- তখন অবশ্যই তোমরা তার প্রতি ঈমান আনবে এবং তাকে সাহায্য করবে। তিনি বললেন, তোমরা কি স্বীকার করেছ এবং এর উপর আমার প্রতিশ্রুতি গ্রহণ করেছ? তারা বলল, আমরা স্বীকার করলাম। আল্লাহ বললেন, তবে তোমরা সাক্ষী থাক এবং আমিও তোমাদের সাথে সাক্ষী রইলাম।” [সূরা আলে ইমরান, আয়াত: ৮১]

এ কারণেই যেসব গ্রন্থ পরিবর্তিত হয় নি তাতে রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের আগমনের স্পষ্ট সুসংবাদ পাওয়া যায়। তাওরাত ও ইঞ্জিলে এ ব্যাপারে অসংখ্য বাণী রয়েছে। সেগুলো এখানে উল্লেখ করার কোনো প্রয়োজন নেই। তবে এখানে হিন্দু ধর্মের কিছু গ্রন্থে আমাদের নবী মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের আগমনের সুসংবাদ সম্পর্কে যা উল্লেখ আছে তা উল্লেখ করাই উদ্দেশ্য। এসব সুসংবাদ তাদের কিতাব সঠিক হওয়ার প্রমাণ নয়, বা এর প্রতি সত্যায়ন করার প্রমাণ করে না; বরং তাতে যে কিঞ্চিত সত্য রয়েছে যা তারা তাদের যুগে প্রেরিত নবী রাসূলদের থেকে নিয়েছিল তা প্রমাণ করাই উদ্দেশ্য।

ড. মুহাম্মাদ দিয়াউর রহমান আল-আ‘যামী তার রচিত ‘দিরাসাতু ফিল ইয়াহূদীয়া ওয়াল মাসীহিয়্যা ওয়া আদইয়ানিল হিন্দ’ নামক কিতাবে (পৃষ্ঠা ৭০৩-৭৪৬) এসব গ্রন্থ থেকে উদ্ধৃতি উল্লেখ করেছেন। বিশেষ করে লেখক হিন্দুস্থানের একজন স্বনামধন্য ডক্টর, হিন্দি থেকে আরবীতে যেসব কিতাব এখনও অনূদিত হয় নি সেসব কিতাব পড়া ও বুঝায় তিনি পণ্ডিত ব্যক্তি। সেগুলোর কিছু নিচে আলোচনা করা হলো:

১- সে সময় সম্ভল গ্রামে (বালাদুল আমীন তথা মক্কা নগরী) তে বিষ্ণু (আব্দুল্লাহ) যিনি নরম অন্তরের হবেন তার ঘরে জন্ম নিবেন কল্কি (যিনি গুনাহ ও পাপ মোচনকারী হবেন) (দেখুন: ভাগবত পূরাণ, ২/১৮)[1]

উল্লেখ্য, আমাদের নবী মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের  পিতার নাম আব্দুল্লাহ, আর মক্কাকে আল-কুরআনে বালাদুল আমীন তথা নিরাপদ শহর নামে নামকরণ করা হয়েছে।   

২- কল্কি বিষ্ণুর (আব্দুল্লাহর) ঘরে স্ত্রী সুমতির (সুস্থ ও নিরাপদ যার আরবী হচ্ছে আমিনা) গর্ভে জন্ম গ্রহণ করবেন। (দেখুন, কল্কি পূরাণ, ২/১১)[2]  

উল্লেখ্য যে, আমাদের নবী মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের মাতার নাম আমিনা বিনতে ওয়াহাব।

৩- তিনি তিনি শুল্কপক্ষের দ্বাদশ তিথিঃ মাধব মাসে (যে মাসটি মানুষের কাছে প্রিয়, তা হলো রবি‘ তথা বসন্ত কাল বা বৈশাখ মাসে) জন্মগ্রহণ করবেন। (দেখুন,  কল্কি পূরাণ, ২/১৫)[3]

সীরাতের কিতাবে রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের জন্ম তারিখ রবিউল আউয়াল মাসের বারো তারিখ উল্লেখ আছে। যদিও এ ব্যাপারে আলেমদের মতানৈক্য রয়েছে।

৪- কল্কি আটটি গুণে গুণান্বিত হবেন। সেগুলো হচ্ছে:

(১) প্রজ্ঞা (তিনি ভবিষ্যতের সংবাদ দিবেন), (২) কুলীনতা (উচ্চ বংশীয়), (৩) ইন্দ্রিয় দমন (নিজের ইন্দ্রিয়সমূহ দমনকারী), (৪) শ্রুতি জ্ঞান (তাঁর কাছে অহী আসত), (৫) পরাক্রম (শারীরিক দিক থেকে শক্তিশালী), (৬) বাগ্মিতা (অল্প কথা বলতেন), (৭) দান (দানশীল) ও (৮) কৃতজ্ঞতা (উপকারীর উপকার স্বীকার করা)।[4]  

উপরোক্ত সব গুণাবলীই মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের মধ্যে বিদ্যমান ছিল। আরবের সবাই তাকে এ গুণে জানত, চাই তারা ইসলামে প্রবেশ করেছে বা কুফুরীতে অবশিষ্ট ছিল।

৫- তিনি ঘোড়ায় আরোহণ করবেন। তা থেকে আলো বিচ্ছুরিত হবে। ভয়-ভীতি ও সৌন্দর্যে কেউ তার সমকক্ষ হতে পারবে না। তিনি খৎনাকারী হবেন, আর তিনি অসংখ্য মানুষকে অন্ধকার ও কুফুরী থেকে আলোর পথে নিয়ে আসবেন। (দেখুন, ভাগবত পূরাণ, ১২/২/২০)।

একথা সকলেরই জানা যে, হিন্দুরা খৎনা করে না, আর উম্মতে মুহাম্মাদীর উপর খৎনা করা শর‘ঈ ওয়াজিব।

৬- তাঁর চারজন সাথীর সাহায্যে তিনি শয়তানকে ধ্বংস করবেন এবং যুদ্ধের ময়দানে তাঁর সাহায্যে আসমান থেকে ফিরিশতা অবতরণ করবেন। (দেখুন, কল্কি পূরাণ, ২/৫-৭)।

আমাদের নবী মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের চারজন সাহাবী হলেন তাঁর চার হিদায়েতপ্রাপ্ত খলীফা যারা তাঁর পরে পৃথিবীতে শাসন কার্য পরিচালনা করেছিলেন। মুসলিম আলেমদের ঐক্যমতে, তারা চারজন আমাদের নবীর পরে উম্মতের মধ্যে সর্বশ্রেষ্ঠ মানুষ ছিলেন।

৭- জন্মের পরে পরশুরামের (বড় শিক্ষক) থেকে শিক্ষা লাভ করতে তিনি পাহাড়ে যাবেন । অতঃপর তিনি উত্তরাঞ্চলে যাবেন। অতঃপর তিনি নিজ জন্মভূমিতে ফিরে আসবেন। (কল্কি পূরাণ)।

এভাবেই দেখা যায় আমাদের নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নবু্ওয়াত প্রাপ্তির পূর্বে হেরা পর্বতের গুহায় নির্জনে একাকী কাটাতেন, অতঃপর জিবরীল আলাইহিস সালাম অহী নিয়ে আগমন করেন। অতঃপর তিনি উত্তরাঞ্চল মদীনায় হিজরত করেন, অতঃপর বিজয়ী বেশে মক্কায় ফিরে আসেন।

৮- তাঁর শরীর থেকে নির্গত সুবাসে মানুষ বিমোহিত হবেন। তাঁর শরীর থেকে নির্গত পবিত্র ঘামের ঘ্রাণ বাতাসে ছড়িয়ে পড়বে এবং মানুষের হৃদয় কমনীয় হবে। (ভাগবত পূরাণ: ২/২/২১)

৯- সর্বপ্রথম যিনি যবেহ ও কুরবানী করবেন তিনি হলেন আহমাদু, ফলে তিনি সূর্যের মত হবেন। (সামবেদ: ৩/৬/৮)।

১০- অচিরেই তাঁর কাছে রূহানী শিক্ষক তার দলবল নিয়ে আসবেন। তিনি মানুষের মাঝে মাহামিদ নামে পরিচিত হবেন, রাজা তাকে এ বলে সম্বোধন করবেন, হে মরু শান্তকারী, শয়তানের পরাজিতকারী, মু‘জিযাধারী, সব অকল্যাণ থেকে মুক্ত, সত্য প্রতিষ্ঠাকারী, আল্লাহর জ্ঞান সম্পর্কে অভিজ্ঞ ও তাঁকে ভালোবাসাকারী, আপনার উপর সালাম (শান্তি), আমি আপনার গোলাম, আপনার পদযুগলে আমি বাস করি। (ভবিষ্যৎ পুরাণ: ৩/৩/৮)।

১১- এর ভূমিকায় আছে, যখন মানুষের জন্য সমষ্টিক কল্যাণ প্রকাশের সময় হবে তখন সত্য রক্তাক্ত হবে, মুহাম্মাদের আগমনে অন্ধকার শেষ হবে, জ্ঞান ও প্রজ্ঞার আলো উদ্ভাসিত হবে। (ভাগবত পূরাণ: ২/৭৬)।

এসব উদ্ধৃতিতে মুহাম্মাদ বা আহমাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের নাম স্পষ্টভাবে উল্লেখ হয়েছে। আর এ দুটিই তাঁর নাম। আল্লাহ তা‘আলা বলেছেন,

وَمُبَشِّرَۢا بِرَسُولٖ يَأۡتِي مِنۢ بَعۡدِي ٱسۡمُهُۥٓ أَحۡمَدُ 

[الصف: ٦]    

“এবং একজন রাসূলের সুসংবাদদাতা যিনি আমার পরে আসবেন, যার নাম আহমদ।” [সূরা আস-সাফ, আয়াত: ৬]

১২- অথর্ববেদ ও  ঋকবেদের অনেক স্থানে নরাশংসের (প্রশংসিত মানুষ) সুসংবাদ উল্লেখ আছে। তার গুণ বর্ণনায় বলা হয়েছে, ‘তিনি পৃথিবীতে সবচেয়ে সুন্দর মানুষ হবেন, তার নূর ঘরে ঘরে প্রবেশ করবে, তিনি মানুষকে পাপ-পঙ্কিলতা থেকে পবিত্র করবেন, তিনি উটে চড়বেন, তার বারোজন পত্নী হবেন। হে মানব শুনে রাখ! নরাশংসের আলোচনা সমুন্নত হবে..... নিশ্চয়ই নরাশংস প্রশংসিত হবেন, তিনি ষাট হাজার থেকে নব্বই হাজারের মধ্যে হিজরত করবেন, তাকে দেওয়া হবে একশত দিনার, দশটি তাসবীহ ও তিনশটি ঘোড়া।

সীরাতের কিতাবে রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের স্ত্রীগণের সংখ্যা উপরোক্ত সংখ্যার অনুরূপ।

১৪- সিন্ধের রাজা ভূজের কাছে রাতের অন্ধকারে একজন উত্তম লোক এসে বলল, হে মহারাজ! আপনার আর্য ধর্ম হিন্দুস্থানে সব ধর্মের উপর জয়লাভ করবে, কিন্তু মহান বড় ইলাহ বা দেবতার নির্দেশনা অনুযায়ী আমি এমন একজন লোকের ধর্ম বিজয় করতে চাই যিনি সব ধরণের হালাল জিনিস ভক্ষণ করবে, তিনি খৎনাকারী হবেন (লিঙ্গের অগ্রভাগের চামড়া কর্তন থাকবে), তার মাথার পিছনে চুলের টিকলি বা লেজ থাকবে না (যা হিন্দুদের থাকে), তার লম্বা দাড়ি থাকবে, তিনি এক মহা বিপ্লবের কথা বলবেন, তিনি মানুষের মাঝে (সালাতের জন্য) আযান দিবেন, তিনি শূকরের মাংস ব্যতীত সব হালাল জিনিস ভক্ষণ করবেন, তার ধর্ম অন্যান্য সব ধর্ম রহিত করবে, তার অনুসারীদেরকে মুসলী (মুসলমান) বলা হবে, সবচেয়ে বড় দেবতা (ইলাহ) এ দীনের ধারকের কাছে অহী পাঠাবেন। (ভবিষ্যৎ পূরাণ: ৩/৩/৩/২৩-২৭)।

আমরা বলব, সালাতের জন্য আযান দেওয়া ও শূকরের মাংস ভক্ষণ না করা ইসলামী শরী‘আতের অন্যতম বৈশিষ্ট্য, আর এর অনুসারীদেরকে মুসলিম বলা হয়; মুসলী নয় (যা তারা তাদের গ্রন্থে বলেছে), তবে শব্দটি কাছাকাছি।

আমরা বলব, হিন্দুধর্ম অনুসারেও আপনাকে ইসলামী আক্বীদা পোষণ করতে হবে এবং মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যা নিয়ে আগমন করেছেন তা অনুসরণ করতে হবে। কেননা হিন্দুধর্ম মতে, -তাদের দাবী অনুযায়ী- এ ধর্ম গোঁড়ামী পছন্দ করে না, সত্য অনুসন্ধান করে, আল্লাহর উপর ঈমান আনয়ন করুক বা না করুক তাতে হিন্দুয়ানীর কোনো কিছু আসে যায় না; যতক্ষণ সে সত্য অনুসন্ধান করতে থাকবে।

হিন্দু নেতা মহাত্মা গান্ধী বলেছেন, হিন্দু ধর্মের বৈশিষ্ট্য হচ্ছে, তাতে মৌলিক কোনো আকীদা বিশ্বাস নেই। যদি আকীদার ব্যাপারে আমাকে প্রশ্ন কর তবে আমি বলব, সেটি হলো গোঁড়ামী না করা, সুন্দর পদ্ধতিতে সত্য অনুসন্ধান করা। আর সৃষ্টিকর্তা আছে কি নেই সে ব্যাপারটি সমান বিষয়। একজন হিন্দুর সৃষ্টিকর্তায় ঈমান আনা অত্যাবশ্যকীয় নয়, সে সৃষ্টিকর্তায় ঈমান আনুক বা না-ই আনুক সর্বাবস্থায় সে হিন্দুই থাকবে।

তিনি আরও বলেন, হিন্দু ধর্মের ভালো দিক হলো, এটি সব ধরণের বিশ্বাসমুক্ত; তবে সব মূল আক্বীদা এখানে বেষ্টিত, অন্যান্য সব ধর্মের মূল উপাদানগুলো এখানে একত্রিত হয়েছে।” এ কথাগুলো মহাত্মা গান্ধীর ‘হিন্দু ধর্ম’ গ্রন্থ থেকে চয়ন করা হয়েছে। তবে মাধ্যম হচ্ছে, ড. আ‘যামী রচিত ‘দিরাসাত ফিল ইয়াহুদীয়া, ওয়াল মাসিহিয়্যা ওয়া আদইয়ানিল হিন্দ’ গ্রন্থ (পৃ: ৫২৯-৫৩০)।

কেউ আরও বেশি জানতে চাইলে ফতওয়া নং ১২৬৪৭২ পড়ার অনুরোধ রইল।

তাহলে আপনি ইসলাম সম্পর্কে অধ্যয়ন কেন শুরু করছেন না? ইসলামের সুন্দর দিকগুলো এবং এর উত্তম আখলাকসমূহ কেন লক্ষ্য করছেন না? অন্যান্য ধর্মের সাথে এ দীনের বৈশিষ্ট্যসমূহ কেন পার্থক্য করে দেখছেন না? কেন লক্ষ্য করছেন না যে, এ দীন পূর্ববর্তী সব দীনের রহিতকারী, ইসলামের নবী মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামই হলেন পূর্ববর্তী সব নবী রাসূলদের সুসংবাদ দেওয়া নবী। এ ব্যাপারটি একেবারেই স্পষ্ট। আল-কুরআনই ইসলামের একমাত্র নাজাতের পথ। এ দীন তাওহীদের দীন। আল্লাহ তা‘আলা বলেছেন,

وَمَن يَبۡتَغِ غَيۡرَ ٱلۡإِسۡلَٰمِ دِينٗا فَلَن يُقۡبَلَ مِنۡهُ وَهُوَ فِي ٱلۡأٓخِرَةِ مِنَ ٱلۡخَٰسِرِينَ

[ال عمران: ٨٥]    

“আর যে ইসলাম ছাড়া অন্য কোন দীন চায় তবে তার কাছ থেকে তা কখনো গ্রহণ করা হবে না এবং সে আখিরাতে ক্ষতিগ্রস্তদের অন্তর্ভুক্ত হবে।” [সূরা আলে ইমরান, আয়াত: ৮৫]

আরও বিস্তারিত জানান জন্য ১৭৫৩৩৯ নং ফাতওয়া দেখার অনুরোধ রইল।

আল্লাহ সর্বাধিক জ্ঞাত।

[1] আরও দেখুন, কালক্রমে বিষ্ণুযশা নামেতে ব্রাক্ষণ। সম্ভল গ্রামেতে জন্ম লইবে তখন।। 
মহাবীর্য মহাবুদ্ধি কল্কী তাহার ঘরে জন্মিবেন যথা কালে দেব কার্য তরে।। মহাভারতের বনপর্বে উল্লেখিত ভবিষ্যদ্বানী, যা শ্রীরাজকৃষ্ণ রায় কর্তৃক বাংলা পদ্যে অনুদিত (মুদ্রিত ১২৯৮ বাংলা) অধ্যায়, ১৯০। - অনুবাদক।

[2]  “শম্ভলে বিষ্ণুযশামে গৃহে প্রার্দুভাবাম্যহম সুমাতাং বিষ্ণু যশম্য গর্ভ মাধব বৈষ্ণবম”। (কল্কি পুরাণ; ২/১৯ অংশ শ্লোক)-অনুবাদক।

[3]  “দ্বাদশ্যাং শুল্কপক্ষস্য মাধবে মনি মাধবম”। (কল্কি পুরাণ; ২/২৫) -অনুবাদক।

[4]  “শ্রীমদ্ভাগবতের ১২/২-১৯ এবং ২০ শ্লোকে উল্লেখ আছে, কল্কি অবতার অষ্টগুণ সমর্থিত”। “অষ্টেগুণাং পুরুষাং দীপযন্তি প্রজ্ঞা চ কৌলাং চ দমঃ শ্রুতং চ পরাক্রম চ বহুভাষিতা দানং যথাশক্তি কৃতজ্ঞাত চ”। [মহাভারত] -অনুবাদক।

http://islamic-invitation.com/lang_show.php?lang_name=%E0%A6%AC%E0%A6%BE%E0%A6%82%E0%A6%B2%E0%A6%BE%28Bangla%29&langID=227
 
All copyrights©2006 Islamic-Invitation.com
See the Copyrights Fatwa